সর্বশেষ আপডেট : ১৪ ঘন্টা আগে
বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

মধ্যরাতে নির্বাচন কর্মকর্তার বাসায় গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আটক

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

রাজশাহীতে মধ্যরাতে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাসায় গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন।

আসন্ন রাজশাহী সিটি নির্বাচন উপলক্ষে লিমন এক কাউন্সিলর প্রার্থীর হয়ে নির্বাচন কর্মকর্তাকে ‘ম্যানেজ’ করতে এসেছিলেন বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

গতকাল রোববার (১৮ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে পুলিশ ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়ি থেকে বের করে থানায় নেন। তবে নির্বাচন কর্মকর্তার বাসা থেকে কী উদ্ধার করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।

পুলিশ নির্বাচন কর্মকর্তার বাসার সামনে অবস্থান করছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল হোসেনও তার ওই ভাড়া বাড়িতেই অবস্থান করছেন।

এর আগে রোববার রাত ৯টার দিকে নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় রাজশাহীর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাসায় যান লিমন। তখন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে বাসায় অবরুদ্ধ করেন। এরপর রাত ১২টায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

উদ্ধারের আগ পর্যন্ত বাসাটি ঘিরে রেখেছিলেন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে লিমনের বাবা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবালসহ পরিবারের সদস্য ও তার সমর্থকরা সেখানে এলে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর লিমনের মামা আবদুল হামিদ সরকার টেকন নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠেয় সিটি নির্বাচনে তিনি আবারও কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন।

লিমনের বাবা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল। লিমনের আরেক মামা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সম্প্রতি এক অশ্লীল ভিডিওকাণ্ডে সমালোচিত হন। মূলত পুরো পরিবারটিই এবারের সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর জন্য কাজ করছেন না বলে অভিযোগ দলের একাংশের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা লিমন ওই নির্বাচন কর্মকর্তার বাসায় ঢুকার পরপরই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে অবরুদ্ধ করেন। অবরুদ্ধকারীদের দাবি, লিমনের সঙ্গে আরও দুজন ওই বাসায় প্রবেশ করেন। লিমনকে বাসায় অবরুদ্ধ করার সময় একটি ব্যাগ নিয়ে মোটরসাইকেলে করে তারা পালিয়ে যান।

লিমনকে অবরুদ্ধ রাখার সময় উপস্থিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। মামা কাউন্সিলর প্রার্থী টেকনকে জেতানো এবং আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকে পরাজিত করার জন্য টাকা দিতে এসেছিলেন এমন অভিযোগ তুলে লিমনকে দল থেকে বহিষ্কারেরও দাবি তোলা হয়।

রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত বলেন, লিমন তার মামাকে জেতানোর জন্য নির্বাচন কর্মকর্তাকে টাকা দিতে আসেন। লিমনের সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন। আমরা খবর পেয়ে বাসাটি ঘিরে রাখি। বাসা অবরুদ্ধ করার সময় একটি ব্যাগ নিয়ে মোটরসাইকেলে কয়েকজন টাকা নিয়ে পালিয়েছেন।

এ বিষয়ে সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের দাবি, টাকা লেনদেনের বিষয়ে তাদের মধ্যে কোনো কথাই হয়নি। তিনি আমার কাছে জানতে এসেছিলেন ভোট সুষ্ঠু হবে কি না।

ভোটের আগে কেন তিনি রাতে আপনার বাসায় এসেছেন জানতে চাইলে আবুল হোসেন বলেন, লিমন রাতে আমার বাসার নিচে এসেছিলেন। তখন তাকে বাড়িতে চা খেতে ডেকেছিলাম। এর বেশি কিছু নয়। আমার বাড়ি থেকে তো কোনো টাকা উদ্ধার হয়নি।

অন্যদিকে, রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তবে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সোহরাওর্দী হোসেন বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমনকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তবে কেন তিনি ওই নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে গিয়েছিলেন তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, আগামী ২১ জুন ইভিএম পদ্ধতিতে রাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। নগরীর মোট ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ১৫৩টি কক্ষে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন।

এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন। আর নারী ভোটার এক লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর ভোটার ৬ জন। এবার নতুন ভোটার রয়েছেন ৩০ হাজার ১৫৭ জন। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ছাড়াও জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: